সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস বুধবার (৩০ মার্চ) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০৯টির বা ২৮.৭৫ শতাংশ শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে দরবৃদ্ধির তালিকায় থাকা ৩০টি কোম্পানির মধ্যে ২৭টিই ছিল বিমা খাতের। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, নন-লাইফ বিমা খাতের ৪০টি কোম্পানির মধ্যে আজ ৩৯টির বা ৯৭.৫০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ১টি প্রতিষ্ঠানেরও মেয়ার দর কমেনি। শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১টি কোম্পানিটর।
দরবৃদ্ধির দৌড়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে জনতা ইন্সুরেন্স। আজ কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৩ টাকা ৩০ পয়সা বা ৮.৩৯ শতাংশ। দরবৃদ্ধিতে এগিয়ে থাকা বিমা খাতের অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রগতি ইন্সুরেন্সের ৭.৮৫ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইন্সুরেন্সের ৬.৮২ শতাংশ, অগ্রণী ইন্সুরেন্সের ৬.৪৮ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্সের ৫.৯৮ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্সের ৫.৮৬ শতাংশ, প্রভাতী ইন্সুরেন্সের ৫.৮২ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্সুরেন্সের ৪.৮৬ শতাংশ, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ৪.৭২ শতাংশ দর বেড়েছে।
দীর্ঘ মন্দার পর আজকের একটি খবরের ওপর ভিত্তি করেই বিমা খাতের কোম্পানিগুলোতে প্রত্যাশার হাতছানি দেখা দিয়েছে। খবরটি হলো- বাংলাদেশে নিবন্ধিত নন-লাইফ বিমা কোম্পানির (জেনারেল ইন্সুরেন্স) পরিশোধিত মূলধন ন্যুনতম ৪০ কোটি টাকা এবং উদ্যোক্তা পরিচালকদের ন্যুনতম শেয়ার ৬০ শতাংশ ধারণ করার নির্দেশনা দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ‘বিমা আইন ২০২১ এর ২১ ধারা এবং তফসিল (১) (খ)অনুযায়ী বাংলাদেশ নিবন্ধিত নন-লাইফ বিমা কোম্পানি ক্ষেত্রে ন্যুনতম পরিশোধিত মূলধন হবে ৬০ কোটি টাকা। যার ৬০ (ষাট) শতাংশ উদ্যোক্তাগণ কর্তৃক প্রদত্ত হবে ও অবশিষ্ট ৪০ (চল্লিশ) শতাংশ জনসাধারণ কর্তৃক প্রদানার্থে উম্মুক্ত থাকেবে, অর্থখাৎ উদ্যোক্তাংশের পরিশোধিত মূলধন ৬০ (ষাট) শতাংশ যা নন-লাইফের জন্য ন্যুনতম ২৪ কোটি টাকা। কিছু কিছু নন-লাইফ বিমা কোম্পানি এখনো তাদের উদ্যোক্তাংশের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ২৪ কোটিতে (৬০ শতাংশ) উন্নীত করতে সক্ষম হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, বিমা খাতে (বিমা আইন ২০১০ প্রণয়নের পর লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিমা কোম্পানি) ও পুরাতন (বিমা আইন ১৯৩৮-এর অধীন লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিমা কোম্পানি) বিমা কোম্পানিসমূহের মধ্যে সামঞ্জস্য বজার রাখার জন্য সকল পুরাতন নন-লাইফ বিমা কোম্পানিকে বিমা আইন ২০১০ এর ধারা-২১ যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা আরও হয়েছে, বর্ণিত অবস্থায়, বিমা আইন ২০১০ এর ধারা-২১ পরিপালনপূর্বক তফসিল-১ অনুযায়ী পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণের জন্য অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সর্বশেষ হিসাবে দেখা যায়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৯টি নন-লাইফ ইন্সুরেন্সের মধ্যে কেবল অগ্রণী ইন্সুরেন্স ও প্রভাতী ইন্সুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে। এরমধ্যে অগ্রণী ইন্সুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৩১ কোটি ৭৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ও প্রভাতী ইন্সুরেন্সের ৩৪ কোটি ৭৫ লাখ ২০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে, তালিকাভুক্ত ৩৯টি নন-লাইফ ইন্সুরেন্সের মধ্যে ৩২টি ইন্সুরেন্সের উদ্যোক্তা শেয়ার ৬০ শতাংশের নিচে রয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রভাতী ইন্সুরেন্সের উদ্যোক্তা শেয়ার রয়েছে ৩০.০৩ শতাংশ, অগ্রণী ইন্সুরেন্সের ৩০.১৫ শতাংশ, পিপলস ইন্সুরেন্সের ৩০.৪১ শতাংশ, প্রাইম ইন্সুরেন্সের ৩০.৪৫ শতাংশ, কর্ণফুলী ইন্সুরেন্সের ৩০.৮৫ শতাংশ, ইসলামিক ইন্সুরেন্সের ৩১.১৬ শতাংশ, নর্দার্ন ইন্সুরেন্সের ৩১.৫৫ শতাংশ, পূরবী ইন্সুরেন্সের ৩১.৫৭ শতাংশ, রিপাবলিক ইন্সুরেন্সের ৩১.৬৭ শতাংশ, কন্টিনেন্টাল ইন্সুরেন্সের ৩২.২৫ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্সুরেন্সের ৩৩.৫২ শতাংশ, সেন্ট্রাল ইন্সুরেন্সের ৩৪ শতাংশ, সোনারবাংলা ইন্সুরেন্সের ৩৪.৬৩ শতাংশ, নিটল ইন্সুরেন্সের ৩৫ শতাংশ, গ্রীনডেল্টা ইন্সুরেন্সের ৩৫,৩২ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্সুরেন্সের ৩৫.৬৭ শতাংশ, সিটি ইন্সুরেন্সের ৩৬.০৬ শতাংশ, ফিনিক্স ইন্সুরেন্সের ৩৬.২০ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিকের ৩৭.৬৬ শতাংশ, ফেডারেল ইন্সুরেন্সের ৩৮.২৬ শতাংশ, বিজিআইসির ৩৮.২৭ শতাংশ, জনতা ইন্সুরেন্সের ৩৯.০৫ শতাংশ, প্রগতি ইন্সুরেন্সের ৪২.০৭ শতাংশ, ইস্টল্যান্ড ইন্সুরেন্সের ৪৪.১১ শতাংশ, পাইওনিয়ার ইন্সুরেন্সের ৪৫.৬২ শতাংশ, রূপালী ইন্সুরেন্সের ৪৬.২৫ শতাংশ, ইউনিয়ন ইন্সুরেন্সের ৪৬.৫৪ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্সুরেন্সের ৪৭.৬১ শতাংশ, এশিয়ার ৪৭.৬৩ শতাংশ, প্যারামাউন্ট ইন্সুরেন্সের ৪৮.৪৮ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্সুরেন্সের ৪৮.৬১ শতাংশ এবং তাকাফুল ইন্সুরেন্সের ৫০.৩৪ শতাংশ।